October 19, 2024, 10:15 am

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
পঞ্চগড়ে ক্ষণজন্মা নায়ক রহমানের ১৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

পঞ্চগড়ে ক্ষণজন্মা নায়ক রহমানের ১৭ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

মোঃ বাবুল হোসেন পঞ্চগড় :
পঞ্চগড়ের কিংবদন্তীতুল্য ক্ষণজন্মা নায়ক রহমান
বাংলাদেশের চিত্র জগতের ঝড়ের মত নায়ক রহমানের উদ্দ্যাম প্রবেশ। তিনি শুধু চিত্র নায়কই ছিলেন না, সফল
পরিচালকও ছিলেন। শৈশবে চঞ্চল মতি সম্পন্ন ছিলেন তিনি । শৈশবেই নাটক,থিয়েটারের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন
তিনি।এই প্রথিতযশা নায়কের ১৯৩৭ সালে আটোয়ারী থানার রাধানগর ইউনিয়নের রসেয়া গ্রামে জন্ম। রসেয়া
প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণী পাশ করে ঠাকুরগাও হাই স্কুলে ভর্তি হন। ঠাকুরগাও থেকে তিনি
মেট্রিক পাশ করেন। তারপর তিনি দিনাজপুর সুরেন্দ্রনাথ কলেজে ভর্তি হন। দিন্জপুরে তাকে ভাল
লাগেনি পরে তিনি পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে ভর্তি হন। তার বাবার নাম ছিল হাফেজ উদ্দীন আহম্মদ।হাফেজউদ্
দীন আহম্মদ অত্যন্ত রাগী লোক ছিলেন। পুত্রের সংগে প্রায়ই বনিবনা হতো না। পিতার সাথে কথা কাটাকাটি
করে একদিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন। চাকুরী নিলেন ঢাকার শাহবাগ হোটেলে। শাহবাগে একটি বছর
কেটে গেল। তারপর তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন রাজশাহীর আব্দুল মজিদ(এস.ডি.ও)মহকুমা প্রশাসকের
মেয়ে কুমকুমকে। কুমকুমের ভাল নাম জুলেখা বানু। বিবাহের পর একটি বছর শাহবাগ হোটেলেই কেটে যায়।
১৯৫৯ সালে তিনি প্রথম অভিনয় জগতে প্রবেশ করেন। তার প্রথম সিনেমা ‘ এ দেশ তোমার আমার ’ (১৯৫৯) ঢাকার চিত্র জগতের যাত্রালগ্নেই এই বরেণ্য চিত্র নায়ক রহমান দর্শকের হৃদয় জয় করে নেন। তার পুরো নাম আব্দুর রহমান।পরবর্তীকালে নবাগত এই রহমান নায়ক হয়ে উঠেন ঢাকার উত্তম কুমার।‘ এ দেশ তোমার আমার’ ছবিতে তিনি ছিলেন জমিদার পুত্রের চরিত্রে। অদ্যাবধি এদেশে যতগুলি সিনেমা জুটি সৃষ্টি হয়েছে
তারমধ্যে সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় জুটি রহমান-শবনম জুটি। নায়ক রহমানের ‘ রাজধানীর বুকে ’ ছবিটি খুবই হিট
করে এবং গোটা পাকিস্তানে আলোড়ন সৃষ্টি করে। তার ছবিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ‘ চান্দা ’, ‘ তালাশ ’, ‘ দর্শন ’, ‘ হারানো দিন ’, ‘ জোয়ার ভাটা ’, ‘ চলো মান গায়ে ’। তালাশ এবং চান্দা ছায়াছবি তৱকালীন সমগ্র পাকিস্তানে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। রহমান অভিনীত তৃতীয় ছবি মুস্তাফিজ পরিচালিত ‘ হারানো দিন ’ মুক্তি পায় ১৯৬১ সালে যাহা দেশ-বিদেশে প্রচুর সুনাম অর্জন করে। ঐসময় শবনম- রহমান
জুটি কলকাতার উত্তম- সুচিত্রার মতো জনপ্রিয় হয়ে উঠে। কিন্তু হায়! ১৯৬৩ সালে ‘ প্রীত না জানে রীত ’ছবি
সুটিং এর সময় সিলেটে এক দুর্ঘটনায় তার একটি পা হারিয়ে ফেলেন। তিনি পাকিস্তানী নায়িকা দীবার
বিপরীতে ‘ মিলন ’ ছবিতে অভিনয় করেন। মিলন মুক্তি পায় ১৯৬৩ সালে, বাহানা ১৯৬৫ , ইন্দন ১৯৬৬, দর্শন ১৯৬৭ কংকন ১৯৬৯, রাজধানীর বুকে ১৯৬০ সালে। নায়ক রহমান নি:সন্দেহে প্রতিভাবান চিত্র শিল্পী এবং পরিচালক ছিলেন। রহমানের কোন পুত্র সন্তান ছিল না। তার পাঁচ মেয়ে। বড় মেয়ে লুবনা, তারপর তোনামি, চামপুল, ললি ও লোপা । পাঁচ মেয়ের মধ্যে ললি শ্রীলংকায় থাকে। বাকী চার মেয়েই আমেরিকার নাগরিকত্বপ্রাপ্ত। সাত- আট বছর ধরে এই মহা নায়ক উচ্চ রক্তচাপ জনিত কারনে চলাফেরা করতে পারেননি। অতিব দু:খের বিষয় সরকারিভাবে তার কোন খোজ-খবর নেয়া হয়নি। অবশেষে এই প্রথিতযশা মহা নায়ক শত শত ভক্তকে কাঁদিয়ে ২০০৫ সালের ১৮ জুলাই না ফেরার দেশে চলে যান। তিনি বেচে না থাকলেও শত কোটি ভক্তের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন অনাদি, অনন্তকাল। মৃত্যুকালে তার ছোট মেয়ে লোপা সাথে ছিল। বর্তমানে তাঁর পারিবারিক কবরস্থান রসেয়া শায়িত আছেন। এই কদর বুঝবে না সে দেশে গুণী মানুষ কখনো জন্মায় না। নায়ক রহমানের মেয়ের হাতে প্রতিষ্ঠিত বর্তমান বাংলাদেশ এপোলো হাসপাতাল রয়েল পার্ক।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD